Thursday, March 10, 2016
শ্বেতাঙ্গদের কাছ থেকে একটি শেখার বিষয় হলো সবকিছুরই
নামকরণ এবং তার সংজ্ঞা নির্মাণ। ছোটবেলা থেকে মানুষ আঁকিবুঁকি কাটেন দেওয়ালে, সেটার নামকরণ ইংরাজিতে কথা হয়েছিল graffity, বাংলায় 'দেওয়াল চিত্রণ' বলা যেতে পারে। এই আঁকিবুঁকিতে হাতের
দক্ষতার থেকে গুরুত্বপূর্ণ বিষয় অংকনকারীর অবচেতনের পাঠ। প্রতিটি শিশুই
অক্ষরজ্ঞানের আগে আঁকিবুঁকি টানে আর এর পাঠ থেকে আমরা পাই এক অনবদ্য ফ্যান্টাসি
জগত। বয়স বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে অনেকের এই আঁকিবুঁকি শিল্পকলার দিকে ঝোঁকে অনেকের বা
অন্য কোনো নান্দনিক কলায়। কেউ বা শিল্পকলার স্কুল-কলেজ পাঠ নিয়ে না নিয়ে শিল্পজীবন
গ্রহণ করে কেউ বা সারাজীবন আঁক কেটেই যায়। অনেককেই দেখা যায় রাস্তায় বা দেওয়ালে চক
ইটের টুকরো অথবা রঙের টুকরো দিয়ে ছন্দিল রেখাসমৃদ্ধ আঁকিবুঁকি টানছেন। সেগুলির
মধ্যে দৃশ্যত বাস্তবের সঙ্গে সাদৃশ্য দেখলে দর্শকসাধারণ আনন্দ পান, অন্যথা মাথা চুলকান। মনের মধ্যে ঘোরাফেরা করে অসংখ্য প্রশ্ন। শিল্পরসিক
মানুষেরা এর মধ্যে খুঁজে পান এক ফ্যান্টাসি-সমৃদ্ধ জগত। কিন্তু দর্শকসাধারণ থেকে
প্রশ্ন ওঠে ... এগুলি কি কোনো শিল্পকর্ম না পুরোটাই পাগলের প্রলাপ ?
ফ্যান্টাসি
নিয়ে পুরানো এক শোনা অভিজ্ঞতার কথা বললে
নিশ্চয় লেখাটির ছন্দপতন ঘটবে না। সময়কাল ৭০-র দশকের আশেপাশে, যে সময়ে অন্তত কিশোর-কিশোরীদের কাছে নীল ছবি বা চটি বই সহজলভ্য ছিলো না।
ঘটনাটি শেয়ার করেছেন প্রয়াত অধ্যাপক ব্রজেন্দ্রনারায়ণ দত্ত। সেই সময় ভোটকর্মী
হিসাবে ব্রজেনজেঠুকে বিভিন্ন স্কুলে (ভোটকেন্দ্রে) যেতে হত। উনি অবসর সময়ে স্কুলের
ছেলেমেয়েদের দেওয়ালে চক বা ইঁটের টুকরো দিয়ে আঁকা ছবি খুঁটিয়ে দেখতেন। তিনি লক্ষ্য
করলেন ছেলে ও মেয়ে উভয়ের স্কুলের বাথরুমে (প্রস্রাবখানা) নগ্নদেহ বা যৌনাঙ্গের ছবি
অপটু হাতে আঁকা থাকতো। ছেলেদের স্কুলে থাকতো বিশাল স্তন সমৃদ্ধ নগ্ন নারীর ছবি যার
নিন্মযৌনাঙ্গ অদৃশ্য, আর মেয়েদের স্কুলে নগ্ন পুরুষের বিশাল
অন্ডকোষ ও ক্ষুদ্র পুরুষাঙ্গের ছবি। স্বাভাবিক ভাবেই এটা অনুমান করে নেওয়া যায়
শাড়ি বা ধুতির আড়াল থেকে সামান্য দৃশ্যমান বস্তুকে কিভাবে ফ্যান্টাসিতে (মনের
মাধুরী মিশিয়ে) রূপান্তরিত করেছে ঐ কিশোর কিশোরীরা। ভিন্ন লিঙ্গের মানুষের কল্পনার
চরিত্রও যে ভিন্ন, তা নিশ্চয় এই ঘটনা থেকে সেটাও সহজেই বুঝে
নেওয়া যায়।
কিন্তু না আমরা শুরু করব শুরু থেকে, অর্থাৎ যৌন-ফ্যান্টাসি নয় আমরা পাঠ শুরু করব শিশু অবচেতন থেকে কৈশোর হয়ে
পরিণত জীবনের দেওয়াল চিত্রণ নিয়ে। বাকের এই ৯৬তম পোষ্টে আমরা নিজেদের মনকে সামান্য
তৈরি করে নি, কারণ যৌনতা বিষয়ক পাঠে ভালো এবং খারাপ(সস্তা)
দুটি দিকই থাকে ... তাই আগে নিজের মনের অবচেতনে একটু জেনে বুঝে নেওয়া জরুরী।
অমিত বিশ্বাস
কৃষ্ণনগর
Subscribe to:
Post Comments (Atom)
bhalo laglo-aro bishode chai
ReplyDelete